This is Mukthi from Madaripur

শেখ হাসিনা : গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও পরিবর্তনের অগ্রদূত

তিনি জাতিকে নতুন এক আশা দিয়েছেন, সেই আশার নাম, রুপকল্প-২০২১, বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার সেই আশা। তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছে সব বাংলাদেশীকে, এক ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন যেখানে সর্বাধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি থাকবে। এবং স্বাধীনতার চার দশক পরে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে কলংকমুক্ত করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন অনুকরনীয় নেতৃত্ব-খাদ্য নিরাপত্তা, শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষায় সমুজ্জ্বল। আততায়ীর হাতে নিহত বাবা মা, খুনীর রক্তে রঞ্জিত তার ভাইয়েরা, শেখ হাসিনা আসলে শত্রুর আগুনের ছাই থেকে উঠে আসা এক মানুষ যিনি দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। বিপথগামী একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে তার বাব মা ভাই সহ পুরো পরিবার নিহত হবার পরে তিনি ৬ বছর নির্বাসনে ছিলেন। ১৯৮১ সালে তার ফিরে আসা ছিলো গণতন্ত্রের ফিরে আসা, দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির ফিরে আসা সেই সাথে অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের বিদায়। নিজের নীতি ও আদর্শকে সমুন্নত রাখার এই যাত্রায় ১৯ বার আততায়ীর হামলার শিকার হয়েছেন যার মধজে সর্বশেষ ছিলো ২০০৪ এর ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা।SHBLOG

এখনো তাঁর হাসি প্রাণবন্ত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলা যেখানে থাকবে না ক্ষুধা ও দারিদ্র্য, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যেই বেঁচে আছেন তিনি। জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’র মাঝি এখন তিনিই।আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ হাসিনা, এই ৬৯ বছর বয়সেও, তাঁর কাছে দেশের চেয়ে বড় কিছু নাই।তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যাসায়মা ওয়াজেদ পুতুলও মায়ের মত একই আদর্শ ধারণ করেন। তার প্রয়াত স্বামী ডঃ এম ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন একজন স্বনামধন্য পরমাণু বিজ্ঞানী।

উন্নয়নের পথ প্রদর্শকshhom.jpg

শেখ হাসিনার দিনবদলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ২০০৮ সালে। ২৯শে ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৬৪ টি আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট জয়লাভ করলে শুরু হয় রুপকল্প ২০২১ এর পথে শুভযাত্রা।তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৭.১১ শতাংশ, মাথা পিছু আয় বেড়ে হয় ১৪৬৬ মার্কিন ডলার, দারিদ্র্যের মাত্রা কমে হয় অর্ধেক যা জনসংখ্যার ২২ শতাংশ, এক কোটি বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে।

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের রাইয়ের পরিপুর্ণ বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অতন্দ্র প্রহরী
মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন

বাংলাদেশের পতাকা যারা ধ্বংস করতে চেয়েছিলো, তাদের হাতে পতাকা সুরক্ষিত নয়। কিন্তু পুর্ববর্তী সরকার, সেই যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা বহনের সুযোগ করে দিয়েছিলো মন্ত্রী করে। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে, শেখ হাসিনে জাতিকে সেই লজ্জা থেকে নিস্কৃতি দিয়েছেন। তিনি বহু আকাংক্ষিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন। তাঁর সরকারের অধীনেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। দুইজন দাগী যুদ্ধাপরাধীর, ইতোমধ্যেই ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আরো অনেকেই বিচারের অপেক্ষায় আছে। এই বিচার ৩০ লক্ষ শহীদ ও ৩ লক্ষ নির্যাতিত নারীর আত্মার সম্মান রক্ষার জন্যে।

বিশ্বশান্তির দুতshhunger.jpg
তার প্রথম শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মধ্যের দীর্ঘদিনের সশস্ত্র সংগ্রামের সমাপ্তি হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি, শান্তি বাহিনীর প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র লাড়মা খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অস্ত্র সমর্পন করে। ১৯৯৮ সালে শেখ হাসিনা ভারত পাকিস্তানে যান, তাদেরকে পরমাণু যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার আহবান জানাতে। এর আগে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষামুলক বিস্ফোরণের কারনে উত্তেজনা চলছিলো।

বৈষয়িক কূটনীতিতে দূরদর্শী নেতা
দুরদর্শী বিদেশ নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে সর্বকালের সবেচেয়ে নৈকট্যপুর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে সমর্থ হয়েছেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তির জন্যে তিনি ইউনেসকো শান্তি পুরস্কার পান। ১৯৯৮ সালে তিনি নিখিল ভারত পরিষদের কাছ থেকে মাদার তেরেসা পদকও পান। ১৯৯৯ সালের ১৫ই মে, তিনি হিগ শান্তি পরিষদের সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। ১৯৯৯ সালে, শেখ হাসিনা সেরেস শান্তি পদক পান যা বিশ্ব খাদ্য পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারপ্রধানদের দেয়া সর্বোচ্চ পুরস্কার।

bangla 3-jpeg

গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক

১৯৭৫-১৯৯৫
এই সময়, দেশকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভুমিকা রাখেন শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালে তার পিতাকে পুরো পরিবারসহ মেরে ফেলা হয় বিপথগামী কিছু আর্মি অফিসারের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনা ৬ বছর নির্বাসনে থেকে ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন। সেই থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ৯টি দীর্ঘ বছর রাজপথে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তার দল হয় প্রধান বিরোধী দল।

১৯৯৬-২০০০shhat.jpg
শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে। সেই সময় তার সরকার যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করে, যা ছিলো সেই সময় বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় একাদশতম। ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়, তাঁর সরকার ২ কোটি বন্যা দুর্গত মানুষকে বিনামুল্যে খাদ্য প্রদান করে। তাঁএ নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের আমলে উল্লেখযোগ্য সাফল্যসমুহ হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, ২১শে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা, এবং বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি।

২০০১-২০০৭
২০০১ থেকে আবারো জাতির ইতিহাসে কালো অধ্যায় শুরু হয়। বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে দেয়া হয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এই সময়েই জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, ৬৪ জেলায় বোমা মারে। ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তার জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের সর্বাত্মক আন্দোলনের ফলে সাজানো নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয় ততকালীন সরকার। জরুরী অবস্থা ঘোষিত হয়। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হয়। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করা হয়। ২০০৭ এর ১৬ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।shamsun-nahar

২০০৮-২০১৩
ব্যাপক জনবিক্ষোভের মুখে তাঁকে ২০০৮ এর ১১জুন প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি চিকিৎসার জন্যে বিদেশ যান এবং ডিসেম্বরের ৪ তারিখে দেশে ফিরেন। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, শেখ হাসিনা “দিন বদলের সনদ” – তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একচেটিয়া বিজয় লাভ করে। তাঁর এই শাসনামলে, জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৬.৫১, সকল খাতের ডিজিটালাইজেশন করা হয়, অবকাঠামো খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়, জঙ্গীবাদ কঠোর ভাবে দমন করা হয় এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় রায় কার্যকর শুরু হয়।shd

২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত
রুপকল্প-২০২১ এ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এবং ভরসার জন্যে সাধারন মানুষ তাঁকে আবার ২০১৪ তে নির্বাচিত করে। এই বার, তাঁর সরকার নিজ উদ্যোগে এবং অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করে যা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করবে। তার সাথে, ঢাকায় মেট্রো রেইল প্রকল্প, দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুত প্রকল্প, ঘরে ঘরে বিদ্যুত নিশ্চিতকরণ, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ এ উন্নীতকরণ সহ আরো কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

জাতির সার্বভৌমত্বের প্রতীক
তার দুরদর্শী বৈদেশিক নীতির সুফল হিসেবে, ভারতীয় লোকসভায় ঐতিহাসিক স্থল সীমান্ত চুক্তি পাশ হয়েছে। এর দলে ছিটমহলবাসীর চার শতকের দুঃখ দুর্দশার অবসান হতে যাচ্ছে। তার ২০০৯-২০১৪ শাসনামলে, বাংলাদেশ দুইটি ঐতিহাসিক সমুদ্র সীমান্ত মামলায় জয়লাভ করে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে।bangla 4-jpeg বাংলাদেশ ভারতের সাথে বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ ২৫,৬০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯,৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার জায়গা পায়।

নারী ক্ষমতায়নে অগ্রপথিক
তিত্নি নিজেই বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ১০০ নারীর মধ্যে একজন। অন্য নারীদেরকেও উদ্দীপ্ত করতে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নারী শিক্ষায় তাঁর অবদানের জন্যে তিনি ইউনেসকোর শান্তিবৃক্ষ পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করায় তাঁর নানা উদ্যোগ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদানের জন্যে গত বছর জাতিসংঘ তাঁকে সাউথ সাউথ পুরস্কার দেয়।

সহজাত নেতৃত্বshco
তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন-একই বছর ভারত – পাকিস্তান স্বাধীন হয়। বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ হয়। তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের শোষণমুলক নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতেই জীবনের বেশিরভাগ সময় পার করে দেন।ছাত্রনেতা হিসেবে শেখ হাসিনা স্বাধীনতাপুর্ব আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৬২র আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় অংশ গ্রহণ ছিলো।shahifa3

ইডেন কলেজের সহ সভাপতি হিসেবে, তিনি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অংশ নেন। তাঁর সেই আন্দোলন সফল হয়। ভাষা শহীদেরা ১৯৫২ সালে বাংলাভাষার জন্যে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রাণ দেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পাকবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন এবং তাকে পাকিস্তানের একটি জেলে বন্দী করে রাখা হয়। শেখ হাসিনা তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের সাথে গৃহবন্দী থেকে মুক্তিযুদ্ধে কৌশলগত ভুমিকা রাখেন। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।

জঙ্গি গোষ্ঠীর একমাত্র লক্ষ্যবস্তু
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের কারণে বার বার তিনি হয়েছেন জঙ্গি গোষ্ঠীর একমাত্র লক্ষ্যবস্তু। এ পর্যন্ত তিনি ১৯ বার মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফিরে এসেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এ গ্রেনেড হামলা যার মধ্যে অন্যতম। ঐদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ যেন পরিণত হয়েছিলো মৃত্যুপুরীতে। গ্রেনেড হামলা হয়েছিলো শেখ হাসিনার সন্ত্রাস বিরোধী গণমিছিলে। শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার জন্য গ্রেনেডের পর ছোড়া হয়েছিলো গুলি। প্রায় ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী সেদিন শহীদ হয়েছিলেন। রাস্তা পরিণত হয়েছিলো রক্ত আর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন মাংসের স্তুপে। জননেত্রী শেখ হাসিনা তখন থেকেই বয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর কানে শ্রবণজনিত সমস্যা।

উন্নত বাংলাদেশের পথিকৃৎ
শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দেশ পরিচালনার নীতি পরিবর্তন করেছে প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবনযাত্রা। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর প্রণীত ৬ দফা গৃহীত হয়েছে। সারাবিশ্বে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা শেখ হাসিনা প্রণীত দারিদ্র্য বিমোচন নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছেন।

ভিশন ফিশন ২০৩০ এবং বি এন পি'র রুপকল্প কপি রাইটঃ

বিগত ১০ মে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর একটি ৫ তারকা হোটেলে তাদের তথাকথিত ভিশন ২০৩০ ঘোষণা করেন। বিএনপি ক্ষমতাতে গেলে কি কি কাজ করবেন তার একটা দিক নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের ভিশনে। বিএনপি তাদের ভিশনে যে সমস্ত কথা বলেছে তা তাদের সাম্প্রতিক সহিংস রাজনীতি থেকে জনগণের চোখ ফেরাতে চটকদার ঘোষণা ছাড়া আর কিছু না।

বিএনপি তাদের ভিশন ২০৩০ তে নতুন তেমন কিছুই নেই, তারা যে সমস্ত অঙ্গীকার করেছে ক্ষতায় গেলে তারা সেগুলি বাস্তবায়ন করবে তার অধিকাংশই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয় বাস্তবায়ন হয়ে গেছে বা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বিএনপির ভিশন ২০৩০ এর কিছু পয়েন্ট একেবারে স্ববিরোধী যদি আমরা তাদের সর্বশেষ বিগত ১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত এই দুই মেয়াদের সরকারের দিকে খেয়াল করি। এবার দেখবো বিএনপির ভিশন ২০৩০ এর একটি পর্যালোচনা।

রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি:
বিএনপি তাদের ভিশন ২০৩০ তে বলেছে তারা সকল মতের উপর শ্রদ্ধাশীল থাকবে। দেশের সকল সম্প্রদারে মানুষের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে এমনকি যদি তারা সংখ্যায় একজনও হয়। সকল প্রকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অবসান করারও ঘোষণা দেয়া হয় তাদের ভিশনে। সকল প্রকার রাজনৈতিক সহবস্থান নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয় তাদের ভিশনে। বিএনপির এই সুন্দর কথার বিপরীত দিক যদি দেখি তাদের অতীত ইতিহাস তাহলে বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। বিএনপি-জামায়াতের সর্বশেষ ক্ষমতাকালীন সময় ২০০১-০৬ এ বিরোধী আওয়ামী লীগের ২৫ হাজার নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতিতে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরেই ব্যাপক প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘুদের উপর। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা, লুটের পাশাপাশি শতাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের উপর। অ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, কানাডা সরকার, ফ্রিডম হাউজ এবং মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর মত এই বিষয়ে বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন বিএনপি-জামায়াত জোটের সেই সময়কার সংখ্যালঘুদের উপর চালানো ধর্ষণের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ২০০৯ সালে বিচার বিভাগীয় তদন্তে নৃসংশ অপরাধে বিএনপি এবং তাদের জোট সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ২৬ হাজার নেতা-কর্মীর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছে।

অতি সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি সহযোগীর ভূমিকার পালন করেছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাঁধাগ্রস্ত করতে যখন জামায়াত ইসলামী দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিন্দুদের উপর হামলা চালায়, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর করে। একই ভাবে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রতিরোধ করতে না পেরে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের উপর যখন হামলা চালায় জামায়াত তখনও বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে। নির্বাচন বানচাল করেত মাসব্যাপী চালানো সহিংসতায় ৪৬ জন নিহত হয়। হাজার হাজার গাড়ি ভাংচুর করা হয়, পুড়িয়ে দেয়া হয় অসংখ্য গাড়ি সেই সময়। পুলিশ, বিজিবি, আনসার এবং সেনা বাহিনীর ২০ জন সদস্য নিহত হয় বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনৈতিক সহিংসতায়।

সেই সময় নির্বাচনকে প্রতিরোধের নামে সরকারি অফিস, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাস্তার পাশে ছোট খাট দোকান পাট, মসজিদ মন্দির এবং নিরীহ গরুকে পর্যন্ত জীবন্ত পুড়ে মরতে হয়েছে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসের কাছে। এমনকি যে ধর্ম নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করে এবং মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান শরীফের কয়েক হাজার কপি পুড়িয়েছে তারা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের কাছে। ট্রেনের ফিস প্লেট তুলে ট্রেনকে লাইনচ্যূত করেছে, ক্ষতি হয়েছে ট্রেনের শত শত বগি। ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রতিহত করতে ৫ জানুয়ারি ৫৮২টা স্কুল পুড়িয়েছে দিয়েছিল বিএনপি-জামাত। ৫ জানুয়ারি প্রিসাইডিং অফিসার সহ ২৬ জন নিহত হয় তাদের সহিংসতার জন্য। সেদিন অসংখ্য আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িতে হামলা, বাংচুর এবং লুটপাট করা হয়।

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ২১ জেলায় ১৬০ জায়গাতে নৃশংস হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘর-বাড়ি লুটপাট করা হয়। ওই সব হামলার কারণে প্রায় ৪ মিলিয়ন টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের। হিন্দুদের বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মন্দির ভাংচুর ও লুটপাট করা হয় সবচেয়ে বেশি ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর। দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বাগেরহাট, যশোর, নড়াইল, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, রংপুর, গাইবান্ধা, নিলফামারী এবং ঠাকুরগাও জেলা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিল।

নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসের আরেক রাজত্ব কায়েম করে। কয়েক মাসব্যাপী আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালিয়ে ২৩১ মানুষ মারে বিএনপি-জামায়াত। নিহতদের অধিকাংশই তাদের সন্ত্রাসীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয়ে হাসপাতালের বেড কাতরাতে থাকে ১ হাজার ১৮০ জন মানুষ। পেট্রোল বোমায় ২ হাজার ৯০৩ টি গাড়ি পুড়েছে, ট্রেনের ১৮টি বগি পুড়িয়ে দিয়েছে এবং ৮টি লঞ্চে আগুন দিয়েছে সেই সময় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা। টার্গেট করে ৭০টি সরকারী অফিস ভাংচুর করেছে বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে এবং ৬টি ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা।

রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় পরিবর্তন:
বিএনপি তাদের ভিশন ২০৩০ তে বলেছে তারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রীর একক নির্বাহী ক্ষমতা হ্রাসে পদক্ষেপ নিবে। কিন্তু কিভাবে কতটুকু ক্ষমতা কমানো হবে তার কোন সুনির্দিষ্ট বর্ণনা নেই তাদের ভিশন ২০৩০ তে। ব্রিটিশ সংসদীয় রীতিতে বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই। কোন সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ছাড়া কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো সম্ভব তা আসলে বোঝা কষ্টকর।

বিএনপির ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী ভবিষ্যতে তারা ক্ষমতায় গেলে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট করা যায় কিনা তা ভেবে দেখবে তারা। যখন কেউ দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের প্রস্তাব করে তখন ভেবে দেখার কোন সুযোগ নেই। এমন প্রস্তাব রাখলে এর পিছনে অবশ্যই যুক্তি সংগত কারণও ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন রয়েছে। এমন প্রস্তাবের পর বেশ স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু প্রশ্ন দেখা দেয় তা হলো: উচ্চ-কক্ষ কি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গঠিত হবে না অনির্বাচিতদের মনোনয়নের মাধ্যমে উচ্চ-কক্ষে স্থান দেয়া হবে? ক্ষমতার ভারসাম্য কিভাবে রক্ষা রক্ষা হবে? ভিশন ২০৩০ ঘোষণার আগে বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে তারা সংসদের উচ্চ-কক্ষ অনির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গঠন করার কথা ভাবছেন।

বিএনপি আওয়ামী লীগের সময়ে করা সংবিধানের আনীত সংশোধনকে বাতিল করতে চায়। বিশেষ করে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা সংক্রান্ত সংশোধনী তারা বাতিল করতে চায়। বিএনপির এটা মনে রাখা উচিত যে সংবিধানে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপীল বিভাগের রায়ের পরেও কি বিএনপি এটা পুন:প্রবর্তন করতে চায়?

বিএনপি সংবিধানে গণভোটের বিধান সংযুক্ত করতে চায়। কিন্তু তারা কি কি কারণে গণভোটের আয়োজন করা হবে সেই বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেয়নি। গণভোটের বিরুদ্ধে অসংখ্য যুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গণভোট সংক্রান্ত খুব বাজে অভিজ্ঞতা রয়েছে বিএনপির আগের সময়ে, বিশেষ করে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সময়ে গণভোটে দেখা গেছে শতভাগের বেশি ভোট কাস্টিং হয়েছে।

বিএনপি জাতীয় সংসদকে সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায়। কিন্তু বিএনপির সাম্প্রতিক অতীত অভিজ্ঞা এই কথা বলে না। তাদের বিগত দুই মেয়াদ সরকারের সময় এবং বিরোধী দলের সময়েও সংসদীয় রাজনীতিকে সংসদে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে স্থাপন করতে পারেনি। ৯ম সংসদে বিএনপি সংসদ বর্জনের রেকর্ড করে। তারা ৪১৮ কার্য দিবসের মধ্যে ৩৪২ কার্য দিবসই সংসদ অধিবেমণ বর্জন করে। একই পার্লামেন্টে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও বিরোধীদল বিএনপিকে সংসদীয় কমিটির চারটিতে সভাপতির পদ দেয়। কিন্তু ৮তম সংসদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠন করলে সেখানে সংসদীয় কমিটির কোন কমিটিতে আওয়ামী লীগকে রাখা হয়নি। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বিএনপি সংসদে বিরোধী দলকে কখনো সিদ্ধান্ত গ্রহনে ভুমিকা রাখার সুযোগ দেয়নি। হঠাৎ করে যে তারা নিজেদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করবে তেমনটা ভাবারও কোন কারন নেই, কারন এখনো তাদের দলীয় নেতৃত্ব ও গঠন অপরিবর্তিত এবং কুখ্যাত ‘হাওয়া ভবনে’র মতো দলীয় ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথাতেই দলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা:
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সামাজিক বিচার, মানুষের মর্যদা এবং সবার সমতা নিশ্চিত করার কথা বলেছে তাদের ঘোষিত ভিশন ২০৩০ এ। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আশ্চর্যজনকভাবে দলটি ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়ে চুপ থেকেছে। বেগম জিয়া আওয়ামী লীগের সময়ে করা সংবিধানের সংশোধনী বাতিল করে পুনরায় সংবিধান সংশোধন করতে চায়। এখানে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মত করেই কি বেগম জিয়া আবারো মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের সংবিধানের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র পাল্টে ফেলতে চান কিনা? বিএনপির এটা পরিস্কার করা দরকার যে, চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তাদের অবস্থান কি হবে যদি তারা নির্বাচিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দল জামায়াত-ই –ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্রতা থাকবে কিনা সে কথা বলেননি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালনা করার কথা বলা বেগম খালেদা জিয়া।

মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে। কিন্তু বেগম জিয়া বলেছেন তারা ক্ষমতায় গেলে বাঙালী জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবে। বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম মূল ভিত্তি হলো বাঙালী জাতীয়তাবাদ। এভাবে বিএনপি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান পরিবর্তন করে কি অসাংবিধানিক পথে নিয়ে যেতে চায়? বিএনপি এটা স্পষ্টভাবে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে কেন বাঙালী জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলদেশী জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়বেন। বাংলাদেশের মানুষকে সংবিধানে বাংলাদেশী হিসবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান পরিবর্তন করে বাঙালী জাতীয়তাবাদ এর পরিবর্তে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করা হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘার্ষিক।

বিএনপি অভিযোগ করেছে বর্তমানে অপরাধের জন্য দায়মুক্তি পাচ্ছে অপরাধীরা, বিএনপির মুখে এমন শোনা সত্যিই হাস্যকর। বিএনপি হলো সেই দল যার প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদের জেল থেকে মুক্ত করে দেয়, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে বিচার করা যাবে না এমন দায়মুক্তি দিয়েছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতাতে এসে বিএনপি ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্ট পরিচালনা করে। সেখানেও সেই অভিযানের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবুও, যদি তারা সত্যিই আইনের শাসনের কথা বলে থাকে তবে তাদের স্পষ্টভাবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিচার কাজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতাতে গেলেও কি আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখতে পারবো? না তারা আবারো যুদ্ধাপরাধী এবং রাজাকারদেরকে পুর্নবাস করবেন অতীতে যেমনটা জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে করে এসেছে।

আর একটি ভয়ঙ্কর বিষয়ের অবতারণা করেছেন বেগম জিয়া তার ভিশন ২০৩০ তে। বিএনপি ক্ষমতাতে গেলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার তালিকা প্রস্তুত করবে। এটা এই কারণে বলা হয়ে থাকতে পারে যে, খুব সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বেগম জিয়া এবং তার দলের নেতারা। বেগম জিয়ার মন্তব্য পরাজিত পাকিস্তানী সরকারের কথারই প্রতিধ্বনি। পাকিস্তানের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত ইসলাম এবং পাকিস্তানের পরাজিত সেনা বাহিনী বরাবরই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের বুঝতে বাকি থাকে না যে বিএনপি তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এবং কি উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা বিতর্ককে সামনে নিয়ে এসেছেন।

দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন:
বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব যদি বলে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়বে তারা তাহলে বিষয়টা একটু আশ্চর্য লাগে বৈ কি! ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের ৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে লজ্জা জনকভাবে দুর্নীতিতে পর পর ৪ বার চ্যাম্পিয়ন হয়। এতিমের টাকা চেকের মাধ্যমে তুলে আত্মসাতের মামলাসহ বেশ কয়েকটি দুর্নীতির মামলা চলমান রয়েছে স্বয়ং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেই।

বেগম জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০১-০৬ পর্যন্ত সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুর্নীতি করার কালে সবচেয়ে বেশি নিন্দিত ছিলেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েবর্তমানে যুক্তরাজ্যে ফেরারী হয়ে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো-এফবিআই এর এজেন্ট পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে দিয়ে গেছে।

বেগম জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো বড় ভাই তারেক রহমানের থেকে কম দুর্নীতিবাজ ছিলেন না। ২০০৪ সালে মার্কিন আদালত জার্মান প্রতিষ্ঠান সিমেন্সকে ৫ লক্ষ ডলার জরিমানা করে কোকোকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে। এর ফলে সিঙ্গাপুর সরকার সেদেশে কোকোর ১৪ লক্ষ মার্কিন ডলার সমপরিমান সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে কারন সিমেন্সের ঘুষের টাকা কোকো সিঙ্গাপুরেই পাচার করে। সেই পাচার হওয়া অর্থের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং সিঙ্গাপুরের সহায়তায় ইতিমধ্যে দেশে ফেরৎ নিয়ে এসেছে।

প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা:
বিএনপি তাদের ভিশন ২০৩০ তে বলেছে রাজনৈতিক প্রভাব বলয়ের বাইরে রাখা হবে প্রশাসন এবং পুলিশকে। কিন্তু সর্বশেষ ২০০১ সালে তারা যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারে প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। অনেক দেশ প্রেমিক সরকারি কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যূত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের এবং বিশেষ করে ১৯৭৩ সালের বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তাদেরকে হয় চাকরিচ্যূত করা হয় নাহলে ওএসডি করে রাখা হয়। দেশের ইতিহাসে প্রশাসনে দলীয়করণের সকল ইতিহাস ভঙ্গ কওে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। বলতে গেলে সমগ্র প্রশাসনে চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছিল।

বিএনপি তাদেও ভিশন২০৩০ তে বলেছে তারা সরকাওে গেলে স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ বাড়াবে। আমরা যদি বিএনপির সময়কার তুলনা করি তবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তাদেও থেকে চারগুণ বেশি বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় সরকারের জন্য। বিএনপির সময় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বরাদ্দের বিপরীতে আওয়ামী লীগ সরকার স্থানীয় সরকারের জন্য বরাদ্দ করেছে ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রথম সরকার ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকারকে গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে ভাগ করে এই বরাদ্দ করে।

বেগম জিয়ার ভিশন ২০৩০ তে প্রশাসন, প্রতিরক্ষা এবং পুলিশ বাহিনীতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এর সবগুলোই বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার হয় বাস্তবায়ন করে ফেলেছে বা বাস্তবায়নের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বর্র্তমান সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করেছে ২০১৫ সালে ৮ম পে স্কেলের মাধ্যমে। (অতি সাম্প্রতিক সময়ে সরকারী চাকরিজীবীদের আরো একদফা বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য সরকার কমিটি গঠন করেছে।) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী এবং বিমান বাহিনী সর্বাধুনিক সরঞ্জামে সুসজ্জিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুগপোযোগী করতে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বেড়েছে কয়েকগুণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সামরিক বাহিনীর বরাদ্দ আগের তুলনায় দ্বিগুণ করে। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সামরিক বাহিনীর বরাদ্দ ছিল ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১.১৮ বিলিয়ন ডলার।

নাগরিক সেবা:
বেগম জিয়া তার ভিশন ২০৩০ তে বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য সেবার মত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উপর জোড় দিয়েছেন। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই বিএনপির অতীত ইতিহাস সুখকর নয়। বেগম জিয়ার ১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রথম সরকারের মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট। সেই সময় দেশে মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সবিধা পেত। সেখান থেকে ১৯৯৬-২০০১ সালে শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের মেয়াদে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮শ’ ৩ মেগাওয়াটে এবং তখন দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসে। বিএনপির দ্বিতীয় মেয়াদে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারেনি বেগম জিয়ার সরকার। বিভিন্ন কারণে ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩শ’ ৭৮ মেগা ওয়াটে। এই সময়ে মধ্যে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ না বাড়াতে পারেনি। শুধুমাত্র ৮ শতাংশ মানুষ বিএনপি বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে পেরেছিল। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপদন ১৫ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। বর্তমানে দেশের ৭৮ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পায় এবং ২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ কওে যাচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্ভাবিত কমিউনিটি ক্লিনিক বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত লাভ করেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য স্থানীয় সরকার পর্যায়ে ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এখন বিশ্বব্যাপী রোল মডেল। শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের মেয়াদে দেশব্যাপী ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরই জনগণের দৌরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার শেখ হাসিনার ওই উদ্যোগটি বন্ধ করে দেয় তখনকার সরকার। তারা অন্যকোন নামে বা অন্যকোন ভাবে স্থানীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার কোন উদ্যোগই নেয়নি। ২০০৯ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরই আবারও দেশব্যাপী ১৬ হাজার ৫শ’ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হয়েছে যেখানে মান সম্পন্ন প্রাথমকি চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

আর্থ-সামজিক উন্নতি:
দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে বিএনপির উল্লেখযোগ্য তেমন কোন অর্জন নেই। ১৯৯৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখনও দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাগ্রহণ কওে তখন ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রমে ২০০১ সালে মাত্র পাঁচ বছরে সেই সংখ্যা ৩৪ শতাংশে নামিয়ে আনেন। পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সেই সংখ্যা আবারো বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ৪ শতাংশে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্র্যেও হার বর্তমানে মাত্র ২২ দশমিক ২২ শতাংশ। বেগম জিয়া তার ভিশন ২০৩০ তে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কথা বলেছেন। কিন্তু সেই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অনেক কিছুই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাস্তবায়ন হয়েছে এবং অনেক কিছুই বর্তমানে চলমান রয়েছে।

সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির কথা বলেছেন বেগম জিয়া। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির ১১টি প্রকল্প চালু রেখেছিল ২০০১-০৬ পর্যন্ত আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ১৪৩টি প্রকল্প চালু রেখেছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি নিশ্চিত করতে। বিএনপি সরকারের শেষ সময়ে ২০০৬ সালে সামজিক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্র্কিন ডলার সেটা আওয়ামী লীগ সরকার বাড়িয়ে ২০১৬ সালে করেছে ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। সমাজের অনগ্রসর মানুষদেরকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সরকার যা যা করার দরকার তার সবই করছে।

খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছেন বেগম জিয়া। কিন্তু বাস্তবতা হলো বিএনপির দুই মেয়াদেই বাংলাদেশে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি ছিল। দেশের উত্তরাঞ্চলের নির্দিষ্ট একটি এলাকায় মঙ্গার প্রকোপ ছিল যাকে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুর্ভিক্ষ বলা যেতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার মঙ্গা শব্দটাকেই জাদুঘরে পাঠিয়েছে। এখন বাংলাদেশের কেউই আর না খেয়ে থাকে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার লড়াইয়ের রাজনীতি। সেখানে তার অগ্রাধিকার বাংলাদেশের কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। বিএনপির ১৯৯১-১৯৯৬ সালের সরকারের সময়ে বাংলাদেশ ৪ মিলিয়ন মেট্রিক টনের খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল। সেখানে থেকে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে ২০ দশমিক ৭০ মিলিয়ন খাদ্য উৎপাদন কওে খাদ্যে উদ্বৃত্ত রেখে যায়। আবারো ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে খাদ্য ঘাটতির দেশে পরিণত করে।বর্তমানে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ৩৯ মিলিয়ন মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে ৫০০ হাজার মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয়ের কথা বলেছে। কিন্তু বিএনপির অতীতে শাসনামলের দিকে তাকালে এমনটি আশা করা যায় না। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তাদের শাসনামলে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৩৮৬-৫৬০ ডলার পর্যন্ত বেড়েছিল। এর বিপরীতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিচু আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪শ’ ৬৬ মার্কিন ডলার।

বিএনপি বাংলাদেশকে নিরক্ষরমুক্ত একটি দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। ১৯৯৬ সালে যখন তারা ক্ষমতা ছাড়ে তখন দেশে স্বাক্ষরতা হার ছিল ৪৪ শতাংশ মাত্র। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মাত্র বছওে ২০০১ সালে দেশে স্বাক্ষরতার হার দাঁড়ায় ৬৫ শতাংশে।২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে স্বাক্ষরতা হার বাড়াতে ব্যর্থ হয়। শুধু ব্যর্থই হয়নি তাদেও ৫ বছরের শাসনামলে স্বাক্ষরতা হার আবারো ৪৪ শতাংশে নেমে যায়। বর্তমানে আওয়ামী লীগের সময়ে দেশে স্বাক্ষরতা হার ৭২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তাই বেগম জিয়া যখন বলেন তারা দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূও করবেন তাকে ভাওতাবজি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। তাদেও ভিশন কি দেশকে আবারো ৪৪ শতাংশে স্বাক্ষরতায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া?

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ:
বিএনপি যখন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদেও বিরুদ্ধে কথা বলে তখন সেটাকে ফাঁপা আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। কারণ দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সবাই জানে তাদের সর্বশেষ ২০০১-০৬ সময়কারের সময়ে কিভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষকতা করা হয়েছে। তাদের সময়েই জামাতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ-জেএমবি’র আত্ম প্রকাশ ঘটে। ওই সংগঠনটি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে তৎকালীন সময়ের অনেক এমপি-মন্ত্রীর ছত্র ছায়ায় বিকাশ লাভ করে। আরেকটি ভয়ঙ্কর জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ শুধুমাত্র তাদের সাহায্য-সহযোগিতাই লাভ করেনি, স্বয়ং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পুত্র তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায় তারা। এই রকম বহু উদাহরণ দেখানো যায় যে, কিভাবে বিএনপি সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদকে উস্কে দিয়েছে। তাদের সরকারের সময়ে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের আতুর ঘর হিসেবেই গড়ে তুলেছিল বিএনপি এবং তাদের জোট সঙ্গী জামায়াত। তারা সকল ধর্মের মানুষের মধে সম্প্রতি বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সরকারের সময় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু এবং আহমেদিয়া সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বাংলাদেশে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন:
বিএনপি তাদের ভিশন এ তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেছে। তারা নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের জন্য সাব মেরিন ক্যাবলের কথা বলেছে। কিন্তু নিকট অতীতে ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতয়া থেকেও সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হয়নি দেশের সকল তথ্য পাচার হয়ে যাবে এমন হাস্যকর যুক্তিতে। সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত না হয়ে বিএনপি তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে আওয়ামী লীগ সরকার সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে। যার ফলে উচ্চ গতি এবং নিরবিচ্ছন্ন ইন্টারনেট পাচ্ছে বাংলাদেশ। বিএনপি ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। তারা হয়তো জানে না, আওয়ামী লীগ সরকার দেশব্যাপী সফলভাবে থ্র্রি-জি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। এই বছরের শেষ নাগাদ দেশে ফোর-জি নেটওয়ার্ক চালু করবে বর্তমান সরকার।

বিএনপি বলেছে তারা আইসিটি শিক্ষা, কৃষিতে তথ্যপ্রযুক্তি, ই-গর্ভানেন্স, পাবলিক সার্ভিসে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করবেন তখন আওয়ামী লীগ সরকার তার সবই ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করেছে ফেলেছ। বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসিবে গড়ে তোলার স্বীকৃতি হিসেব আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বহু স্বীকৃতি এবং সম্মাননা পেয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে এরই মধ্যে যা ভবিষ্যতে ক্ষমতাতে গেলে বিএনপি করার ঘোষণা দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিএনপির ভিশন ২০৩০ তে এমন কোন নতুন পরিকল্পনা নেই যা আওয়ামী লীগ করেনি। যদি আমরা বিএনপির ভিশন ২০৩০ এর দিকে তাকাই তাহলে দেখা যাবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যা কিছু করেছে বা করছে তা ভবিষ্যতে ক্ষমতাতে গেলে বিএনপি করবে বলে অঙ্গীকার করেছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা:
বিএনপির ভিশন ২০৩০ বলা হয়েছে তারা ক্ষমতায় গেলে সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের জন্য নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করবে। কিন্তুবাস্তবতা হলো নিকট অতীতে ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সাংবাদিকদেও জন্য কঠিন সময় ছিল। ওই সময়ে ১৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে। ৫ শতাধিক মামলা করা হয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এবং সমান সংখ্যক পরিমাণ হামলার শিকার হয়েছে সাংবাদ কর্মীরা তাদেও ৫ বছরের শাসনামলে। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশের দায়ে বহু সাংবাদিক গ্রেফতার এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ঘোষণা:
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যে ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি তাদের ভিশন ২০৩০ তে তার অধিকাংশই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করছে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ এবং সক্রিয় নেতৃত্বে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষা বিষয়ে আইন করেছে। জীববৈচিত্র রক্ষা, জলাভূমি, বন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য বিশেষ আইন করেছে। এই সময়ে কমপক্ষে ৮টি আইন নতুন করে করা হয়েছে ২০০৯ সালের আইন সংশোধন করে ভবিষ্যতের বনভূমি সংরক্ষণের জন্য।

দেশে বনভূমির পরিমান বেড়ে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে ২০১৪-১৫ সালের হিসেবে মত যা বিএনপি ক্ষমতা থাকার সময় ২০০৫-০৬ সালে ছিল মাত্র ৭-৮ শতাংশে। আর এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের ফলে। সামজিক বনায়ন কর্মসূচি, যা জনগণকে সরাসরি সম্পৃক্ত করা হয়েছে এবং বনায়ন কর্মসূচিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে শহর বা গ্রাম সব জায়গাতে। বর্তমানে প্রতিবছর ১২০ মিলিয়নেরও বেশি গছের চারা জনগণের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। বিএনপির শাসনামলে ২০০১-০৬ সালে যা ছিল মাত্র ৪০ মিলিয়ন গাছের চারা বিতরণ করা হতো। বাংলাদেশ দক্ষিণের উপকূলী এলাকায় সাইক্লোন থেকে রক্ষার জন্য গ্রিনবেল্ট প্রজেক্ট এর মাধ্যমে বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কারণে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মানুষের মৃত্যুহার কমানো সম্ভব হয়েছে। ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলা এবং ২০১৩ সালে ঘূর্ণিঝড় মোহসিনের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ২শ’ মানুষের। এই সংখ্যা অনেক কম যখন ১৯৯১ সালের একটি মাত্র ঘূর্ণিঝড়ে ১লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল তার সঙ্গে তুলনা করলে।

উন্নয়নশীল দেশেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা জলবায়ু পরিবর্তন ঝুকি মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণ এবং অ্যাকশন প্ল্যান তৈরী করেছে। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৪-১৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের জন্য ৩৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে। বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য বার্ষিক ৬-৭ শতাংশ বাজেটে বরাদ্দ করছে। দ্য বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড ( বিসিসিটিএফ) গঠন করা হয়েছে সংসদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এবং বাংলাদেশ সরকার এর জন্য অর্থায়ন করছে।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সবুজ নবায়নযোগ্য জ্বালানীর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অগ্রাধিকার দিয়েছে। সরকার ২০২০ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুতের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে এবং এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানী দিয়ে উৎপাদন হবে ২ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট।

যোগাযোগ ও শিল্পঃ
সড়ক ও জনপথ যোগাযোগ নিয়ে বিএনপির অঙ্গীকারের প্রায় সবগুলো প্রকল্প হয় আওয়ামী লীগ সরকার ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন করে ফেলেছে নতুবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যেমন পদ্মা সেতু, ঢাকা চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণ, এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া এবং ওয়ান বেল্ট রোড উদ্যোগ, দেশব্যাপী মহাসড়কগুলোকে চারলেনে উন্নীত করার সব প্রকল্প আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করছে। পর্যটনের ক্ষেত্রেও যেসব অঙ্গীকার করেছে বিএনপি সেইগুলোরও সবই প্রায় হয় বর্তমান সরকার বাস্তবায়ন করেছে নতুবা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বিএনপি যখন বলে তারা ক্ষমতায় গেলে তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক, শিল্প পার্ক এবং ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করবে তখন এই কথা বলা তাদের জন্য অনেক দেরি হয়ে গেছে। কারণ এই সব প্রকল্পই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাস্তবায়ন হচ্ছে দ্রুত গতিতে।

নারী ও শিশুর উন্নয়ন:
বিএনপি নারীর উন্নয়নে কাজ করবে এই কথা শুনলে ফাঁপা আওয়াজ ছাড়া আর কিছু মনে হয় না। কারণ বাংলাদেশের নারীর উন্নয়নের জন্য সকল কাজের জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় যে দলটি তাদের মুখে এমন কথা সত্যিই হাস্যকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স এ বাংলাদেশ ২০০৬ সালে ৯১ তম অবস্থান করতো। আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৬ সালে ৬৪তম অবস্থানে রয়েছে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স এ। বাংলাদেশে এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর উন্নয়ন দৃশ্যমান করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপির দাবি তারা ক্ষমতায় গেলে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কঠোর আইন করবে কিন্তু বাস্তবতা হলো এই রকম আইন যেমন গৃহনির্যাতন বা নারী পাচার রোধে আইন ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালে শিশু নীতি প্রণনয়ন করেছে এবং সেই আলোকে ২০১৩ সালে জাতীয় শিশু আইন পাস করেছে। শিশুদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্র বাস্তবায়নও করেছে।

উপসংহার:
বিএনপি ঘোষিত তাদের ‘ভিশন ২০৩০’ রাজনীতিতে তারা নতুন জীবনের সন্ধান করছেন। এটা সহজেই বোধগম্য যে বিএনপির অপরিমাণদর্শী রাজনীতির কারণে তারা জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন বয়কট করার কারণে তারা জনগণ থেকে আরো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের জন্য তারা জনগণ থেকে আরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিএনপির জন্মই হয়েছে হত্যা ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। তাদের সর্বশেষ ক্ষমতার মেয়াদ ২০০১-০৬ এ রাজনীতিতে সন্ত্রাস ও অপরাধের কারণে শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীদের কাছে না যারা রাজনীতি সচেতন তেমন সাধারণ মানুষও বিরক্ত। তারা যদি সত্যিকরা অর্থেই একটি ভিশন নিয়ে জনগণের কাছে আসতে চায় তবে তাদের উচিত হবে অতীতের সকল অপকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে রাজনীতি করা। তারা যদি ক্ষমা প্রার্থনা করে তখনই তাদের পলিসি প্রস্তাব নিয়ে জনগণ ভেবে দেখবে।

www.albd.org/

http://muktimusician.blogspot.com/

www.youtube.com/muktimusician
www.myspace.com/muktimusician,
www.shtyle.com/muktimusician,
www.last.fm/muktimusician

Tuesday, May 10, 2011

"LIVE STYLE OF MY FATHER":SHEIKH HASINA


"LIVE STYLE OF MY FATHER" 
by Sheikh Hasina

BANGABANDHU SHEIKH MUJIBUR RAHMAN DEDICATED his life to establishing a democratic, peaceful and exploitation-free society called "Sonar Bangla" - Golden Bengal. He sacrificed his life to liberate the Bangalee nation, which had been groaning under the colonial and imperialist yoke for nearly 1,000 years. He is the founding father of the Bangalee nation, generator of Bangalee nationalism and creator of the sovereign state of Bangladesh.

My father spent nearly half his life behind bars and yet with extraordinary courage and conviction he withstood numerous trials and tribulations during the long period of his political struggle. During his imprisonment, he stood face to face with death on at least two occasions, but never for a moment did he waver.

As a daughter of Sheikh Mujibur Rahman, I heard many tales about him from my grandfather and grandmother. He was born on Mar. 17, 1920 in Tungipara, in what was then the British Raj. During the naming ceremony my great-grandfather predicted that Sheikh Mujibur Rahman would be a world-famous name.

My father grew up rural - amid rivers, trees, birdsong. He flourished in the free atmosphere inspired by his grandparents. He swam in the river, played in the fields, bathed in the rains, caught fish and watched out for birds' nests. He was lanky, yet played football. He liked to eat plain rice, fish, vegetables, milk, bananas and sweets. His care and concern for classmates, friends and others was well-known. He gave away his tiffin to the hungry, clothes to the naked, books to the needy and other personal belongings to the poor. One day, my grandfather told me, he gave his clothes to a poor boy and came home in his shawl.

At the age of 7, he began his schooling, though an eye ailment forced a four-year break from his studies. He married at the age of 11 when my mother was 3. He demonstrated leadership from the beginning. Once in 1939, he led classmates to demand repair of the school's roof - just when the premier of then undivided Bengal happened to be in town. Despite a deep involvement in politics, in 1946 he obtained a BA.

Bangabandhu was blessed from boyhood with leadership, indomitable courage and great political acumen. He played an active role in controlling communal riots during the India-Pakistan partition. He risked his life for the cause of truth and justice. He rose in protest in 1948 against the declaration of Urdu as the state language of Pakistan and was arrested the following year. He pioneered the movement to establish Bangla as the state language. In 1966, he launched a six-point program for the emancipation of Bangalees. In 1969, my father was acclaimed Bangabandhu, Friend of Bengal. His greatest strength (and weakness) was his "love for the people." He is an essential part of the emotional existence of all Bangalees.

The appearance of Bangladesh on the world map in 1971 was the culmination of a long-suppressed national urge. On Mar. 7, 1971, my father addressed a mammoth public meeting in Dhaka and declared: "The struggle now is the struggle for our emancipation; the struggle now is the struggle for Independence." He sent a wireless message, moments after a crackdown by the Pakistani army, declaring the Independence of Bangladesh in the early hours of Mar. 26. The world knows he courted arrest - and yet Bangabandhu emerged as the unquestioned leader of a newborn country.

Once in power, my father pursued a non-aligned, independent foreign policy based on peaceful coexistence. Its basic tenet: "Friendship to all, malice to none." He advocated world peace and declared his support for all freedom struggles. He supported the concept of a "Zone of Peace" in the Indian Ocean. In 1974, he was awarded the Julio Curie Prize for his devotion to the cause of peace.

But at a time when Bangladesh was emerging as an advocate for oppressed nations, his foes assassinated him on Aug. 15, 1975. My mother and three brothers were also killed. Even my younger brother Sheikh Russel, who was then nine, was not spared. The only survivors were my younger sister Sheikh Rehana and myself; we were on a trip to Germany.

Consequently, the political ideals for which Bangladesh sacrificed three million of her finest sons and daughters were trampled, and Bangladesh became a puppet in the hands of imperialism and autocracy. By assassinating Sheikh Mujibur Rahman, the conspirators wanted to stop the country's march to freedom, democracy, peace and development. The process of law and justice were not permitted to take their course; human rights were violated. It is, therefore, the solemn responsibility of freedom- and peace-loving people to help ensure the trial of the plotters and killers of this great leader, my father.

Sheikh Hasina, daughter of the late Sheikh Mujibur Rahman, is the prime minister of Bangladesh.

No comments:

Post a Comment